একটি প্রেমের কবিতা লিখতে চাই
এম. এল. আর .বিপ্লব
শাহনামা-মহাভারত-বিষাদসিন্ধু-রুবাইয়াৎ নয়
গতি প্রগতি কিংবা প্রাগৈতিহাসিক কাহিনী নয়
একটি প্রেমের কবিতা লিখতে চাই,
বর দাও মা…একটি কবিতার৷
প্রেমহীন খরায় কত বসন্ত হলো সাহারা
চিত্ত শূলে কত নদী হলো জলধি?
কালের চিতায় ভস্ম হলো
কত ঝলসিত সভ্যতা?
মাটি হলো কত কালপুরুষের জীবাশ্ম?
অথচ অামি বেদুঈন,
অাজও অাছি প্রেমহীন ব্যাথার কফিন!
সময়ের গতি পথে যতবারই করেছি পণ
যতবারই লড়েছি বিবেকের মহা রণ
দূরে ঠেলে সব জড়তা,
লিখতে…মাত্র একটি প্রেমের কবিতা!
রিক্তের রক্তে ততবারই হয়েছে লীন
শব্দের শবদেহ,
প্রেমের পাড়া-গাঁয়ে
ততবারই লেগেছে গ্রহণ
বেড়েছে সন্ধেহ৷
দীন অারো নব-নীতে হয়েছে হীন
দিনে দিনে সুদিনও হয়েছে বিলীন,
নির্ঘুম রাত গুলো
কেটে গেছে নির্মোহ৷
প্রেমের কক্ষপথে এভাবেই বার বার,
দানা বেঁধে উঠেছে বিদ্রোহ৷
তাই প্রেমের কবিতা আজ বিক্ষত ইতিহাস
ফাগুনেরা হয়ে গেছে আজ আগুনের বূর্য,
যৌবনও পুড়ে পুড়ে
বিশুদ্ধ পোড়া মাটি,
কলমও হয়ে গেছে শূলা-রণতূর্য৷
ধূর্তের ধূর্ততা,
স্বৈরীর বৈরীতা
বার বার ঘটায়েছে ছন্দপতন,
বিবেকের বিবাদে শতাব্দী ধরে তাই,
কবিতার সাথে কবির
নিদারুণ প্রহসন৷
স্বপ্নের পাঁজরে সময়ের হিংস্রতা
স্বহস্তে এঁকে গেছে ছিন্ন রেখা,
জীবন্ত ভিসুভিয়াস
চিত্তে পুষে,
অামারও হয় নি প্রেমের কবিতা লেখা৷
অাজ কবিতার অঙ্গে জ্বলে ভুজঙ্গ অগ্নি
ছন্দে ছন্দে পুড়ে প্রেমময় লগ্নি
এনে দিতে আর্তের মুক্তি,
অামরণ অনশনে
প্রেমহীন কবিতারা
সময়ের সাথে করে অসম চুক্তি৷
ধূসর দিগন্তে উষর বসন্ত
এভাবেই বার বার আসে যায় বৃথা,
সময়ের প্রয়োজনে
সময়ের কলম
স্রাবিত করে যায় আর্ত -গাঁথা৷
প্রেমহীন সরোবরে বিদ্রোহী শূলাও
নীরবে চাতক হয়ে ভাসে,
দ্রোহের ভাসান চরে বিদ্রোহ জড়ো করে,
নিস্প্রাণ ছবি হয়…বেদনার পাশে!
অতএব তোমার কর্ষিত বক্ষদেশে করতে দাও
একটি প্রেমের কবিতার আবাদ,
মাত্র একটি প্রেমের কবিতা যে
“তার” অন্তিম সাধ৷
আমার কবিতার পালকি চড়ে,
“সে” সুদূরিকা হতে চায়!
যেতে যেতে মিশে যেতে চায়
শাপলা-রাজহংস-বুনোফুল-কৃষাণীর উঠোনে,
ছুঁয়ে যেতে চায় শরতে শিশির ভেঁজা
শিউলির বাগ৷
কিন্তুা আমার কবিতার কৃষ্ণচুঁড়ায় তো
শুধুই রক্ত রাগ!
শব্দ-ছন্দ-লয়ে…বিনাশ-প্রলয়!
মর্মে-ধর্মে-কর্মে মনুষ্যত্ব পোড়া গন্ধ,
ক্ষণে ক্ষণে অতৃপ্ত মৃত্যুর বলয়!
অতঃপর…হে মাতৃ বর,
এবার থামাও তোমার অস্থিরতার ঝড়!
আমি সুস্থিরে লিখতে চাই
একটি ফরমায়েশি প্রেমের কবিতা!
আমাকে লিখতে দাও,
“তার” অন্তিম অভিলাষকে শিখতে দাও,
তা না হলে ভস্ম করে দেবো তোমার বানর সভ্যতা,
এক সভ্যতার দামে লিখবো একটি প্রেমের কবিতা৷
——————————————————————————
উৎসর্গ: আমার (কবির) জন্মদাত্রী প্রাণপ্রিয় মাতা-কে৷
প্রেক্ষাপট: সতত অশান্ত ও বিধ্বস্ত মত ও পথ৷
কবির কলম: উক্ত কবিতায় কবি ও কবির মাতার কাল্পনিক কথোপকনের নেপথ্যে উঠে এসেছে সমাজের অসঙ্গতি এবং অনিয়মের বিভিন্ন দিক৷ কবি তার মায়ের কাছে একটি প্রেমের কবিতা লিখার বর চাচ্ছেন এর অর্থ হলো তিনি সমাজের প্রশান্তি স্থিতিশীলতা ও পরিশুদ্ধতা কামনা করছেন৷ কল্পনা আর বাস্তবতার সংমিশ্রণে কবির কলমে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে সেই সত্য মিথ্যারই তফাৎ৷
জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ) নিয়মিত প্রতি সপ্তাহে কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। সপ্তাহব্যাপী সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশী কবিরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অনলাইন ভিত্তিক এই সংগঠনের প্রতিয়োগিতা নিয়ে পোষ্ট এর কমেন্টস বক্সে কবিতা জমা দেয়।
বিজ্ঞবিচারক মণ্ডলী অত্যন্ত নিখুত দক্ষতার সাথে সেখান থেকে কবিতা বাছাই করেন। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বাছাই করে সপ্তাহের সেরা কবিতাগুলো প্রকাশ করে প্রতিযোগিতা শেষ হবার পরের দিন।
এভাবে ১১০ তম প্রতিযোগিতা সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতে সমর্থ হয়েছে। শুরু হয়েছে ১১১তম প্রতিযোগিতা। কবি ও সংগঠক টিপু রহমানের হাত ধরে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে বাংলা সাহিত্যকাশে দ্বিপ্ত বিচরণ করছে জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ)।
আমরা নিয়মিত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সেরা কবিতাগুলো থেকে বাছাই করা কবিতা আমাদের নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করবো।