করোনা থেকে রক্ষা পেতে এক যোগে আজান দেয়া হয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। চট্টগ্রাম-কুমিল্লা-নোয়াখালি এলাকায় বেশি মাত্রায় দেখা যায়। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যাদের জ্ঞানের পরিমাণ খুব কম, মূর্খ শ্রেণির এরাই বেশি এমন গুজবে কান দিয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রাত ১০টার পর থেকে আজান দেওয়া শুরু হয়েছে। রাত ১১টা পর্যন্ত থেমে থেমে আজান দেওয়ার কার্যক্রম চলে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর রহমত কামনা করে এই আজান দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
মসজিদে মসজিদে আজান দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাউজান উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘একটি ইসলামী সংগঠনের পক্ষ থেকে মসজিদে রাত ১০টায় আজান দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সেই অনুসারে আশপাশের মসজিদ থেকে রাত ১০টার পর থেকে আজান দেওয়া শুরু হয়।’
এদিকে একটি ভিডিও বার্তায় আজান দেওয়ার বিষয়টিকে গুজব বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রামের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসার প্রফেসর মুফতি ওবায়দুল হক নঈমী। তিনি ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, আমার নামে কারা গুজব ছড়িয়েছে জানি না। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর বিষয়ে আমি রাতে মসজিদে মসজিদে আজান দেওয়ার কথা কোথাও বলেনি। আমার নামে কেউ এসব কথা বললে সেগুলো গুজব।
রাত পৌনে ১১টায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া গ্রামের মাইজপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম আবুল কালাম আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোন সংগঠন মসজিদে আজান দেওয়ার কর্মসূচি দিয়েছে আমি জানি না। তবে এলাকার অন্য মসজিদগুলোতে থেকে আজানের শব্দ শোনে আমিও আজান দিয়েছি।’
এরপর রাত ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর বেশ কয়েকটি মসজিদ থেকে আজানের শব্দ ভেসে আসে। রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সময়ে চট্টগ্রামের অনেক মসজিদে আজান দেওয়া হয়।
মধ্য রাতে আজানের বিষয়ে কেঁওচিয়া মোজহেরুল হক ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিটেডেন্ট আবদুল মালেক বলেন, ‘মধ্যরাতে আজান দেওয়ার কর্মসূচি কারা ঘোষণা করেছে জানি না। তবে এলাকার মসজিদগুলোতে আজান দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য আজান দেওয়ার ধর্মীয় বিধান আছে। এর বাইরে আজানের ফজিলত কী? সেটা আমার কাছে স্পষ্ট নয়।’
ফেসবুকে যেসমস্ত হাদিস গ্রন্থের রেফারেন্স দেয়া হয়েছে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই ঐনামে কান হাদিস গ্রন্থ্য নেই। সিহাহ্ সিত্তাহ্ র রেফারেন্স দিতেও ভুল করে না আবার অনেকে। সিয়াহ্ সিত্তাহ্য় এরকম কোন হাদিস পাওয়া যায়নি।
যেখানে করোনা বিস্তারে সকলের দূরে থাকা উচিত সেখানে কে বা কারা এমন পোষ্ট করে ফেসবুকের মা্ধ্যমে ভাইরাল করায় একযোগে বিভিন্ন জায়গায় আজান এবং আজানের পর নামাজ-ও পড়েছে অনেকে। যে সব ব্যক্তিদের রেফারেন্স দিয়ে এসমস্ত পোষ্ট করা হযেছে তারা বলেছেন “আমরা আসলে জানি না। এটি একটি সুস্পষ্ট ফেতনা। ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য দাজ্জাল এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার কাজই হবে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো।”