নেত্রকোনায় নেশাগ্রস্ত যুবক রবিন প্রতিবেশী শিশু সজিব মিয়াকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় নেশাগ্রস্ত বখাটে যুবকটিকে গণপিটুনি দেয়া হয় এতে সে নিহত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে শহরের নিউটাউন পুকুরপাড় এলাকায় গণপিটুনিতে রবিন নিহত হন। ভিডিওতে দেখা যায় প্রথমদিকে কিছুলোক রবিনকে মারতে না করলেও উত্তেজিত জনতা দ্বিতীয় দফায় তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন।
নিহত নেশাগ্রস্ত যুবক রবিন শহরের পূর্ব কাটলি এলাকার এখলাছুর রহমানের ছেলে। তার বয়স ছিল ২৮। গলা কেটে হত্যার শিকার শিশু সজীব একই এলাকার রিকশাচালক রইস উদ্দিনের ছেলে। সজীবের বয়স ছিল সাত।
নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম সার্বিক তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে শিশুটির মাথা কাটার রহস্য এখনো খুঁজে পায়নি পুলিশ। নেত্রকোনা পুলিশ গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবারই সংবাদ ব্রিফ করেন।
নিহত শিশু সজিবের মা শরীফা বেগম বলেন, সকালে ঘর থেকে পাঁচ টাকা নিয়ে বের হয় সজিব। দুপুরে আর ঘরে ফেরেনি সে। সন্দেহ হলে খোঁজাখুঁজি শুরু করি আমরা। একপর্যায় জানতে পারি শহরের নিউটাউন এলাকায় এক শিশুর দেহ বিচ্ছিন্ন কাটা মাথা নিয়ে ধরা পড়া যুবককে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হই দেহ বিচ্ছিন্ন মাথাটি শিশু সজীবের। গণপিটুনিতে নিহত যুবক রবিন আমাদের প্রতিবেশী ছিলেন।
নিহত শিশু ও যুবকের প্রতিবেশীরা জানান, দুপুরে একটি ব্যাগে করে সজীবের কাটা মাথা নিয়ে মদপান করতে যায় রবিন। পরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন কৌতূহল নিয়ে ব্যাগে কি আছে দেখতে চান। এ সময় রবিন জানায় ব্যাগে মাছ আছে কিন্তু ব্যাগ থেকে রক্ত গড়াতে থাকলে ব্যাগ চেক করে হরিজনরা। ওই সময় তারা দেখতে পান ব্যাগে শিশু সজীবের কাটা মাথা। তাৎক্ষণিক দৌঁড় দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে রবিন।
বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ধাওয়া করে নিউটাউন পুকুরপাড় এলাকায় সজীবের কাটা মাথাসহ ধরে ফেলেন। সেই সঙ্গে তাকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে রবিনের মরদেহ ও শিশু সজীবের কাটা মাথা উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এর কিছুক্ষণ পর সজীবের বাসার সামনের সড়কের কায়কোবাদের নির্মাণাধীন ভবনের তিনতলা থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, ঘটনার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শিশু সজীব ও বখাটে রবিনের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। সজীবের মস্তক বিচ্ছিন্ন মরদেহটি তার বাসার সামনের সড়কের পূর্ব কাটলি এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনের তিনতলা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী জেলাবাসীকে শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মূলত এটি বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা। এ ঘটনার রহস্য খুঁজছি আমরা।
এদিকে পদ্মা সেতুকে মাথা লাগবে এই গুজবকে কেন্দ্র করে অনেকেই বিশ্বাস করে বসে আছেন সত্যিই সেতুতে মাথা লাগবে আর এই বিষয়ে একাধিক ব্যক্তি পোষ্ট করেও বসেছেন। পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করতে একটি মহল তৎপর হয়ে এমন গুজব যেমন ছড়াতে শুরু করেছিলেন এখন তাদের হাতে রবিনের ভিডিও ফুটেজটি পেয়ে তারা অনলাইনে দ্রুুত ছড়িয়ে দেয়। এতে করে জনমনে আর-ও বেশি আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
টাঙ্গাইলের মধুপুরের কেএম পারভেজ ওয়াহিদ নামে এক যুবক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন…
“মাননীয় প্রধানমন্রির কাছে অনুরোধ! মানুষের মাথার জন্য যদি পদ্মা সেতুর কাজ নাই করা যায়, তবে বন্ধ করে দিন পদ্মা সেতুর কাজ।মানুষের প্রানের বিনিময়ে কোন সেতুর দরকার নেই, আমরা সাধারন জনতা এমনিতেই খুব সুখে আছি।একজনের প্রানের বিনিময়ে আরেক জনের যাতায়াত ব্যাবস্থা হোক এটার কোন দরকার নেই।হয়তোবা ভাবতে পারেন হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হলো সেটার কি হবে! যতো কোটি টাকাই খরচ হোক না কেন, ঐ টাকাটা কিন্তু আপনার একার নয় ঐ টাকাটা আমাদের জনগনের। আমরা প্রত্যেকটি জনগন ঐ টাকার দাবী এবং হক ছেড়ে দিলাম।
মাননীয় প্রধান মন্রী! আপনার কোল থেকে যদি আপনার ছেলেকে কেড়ে নেয়া হয়, আপনার কেমন লাগবে.?
প্রত্যেকটি মায়েরই তেমনি লাগবে।যাদের মাথা কেটে নেয়া হচ্ছে এর মধ্যে অনেকেই বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। একটু ভেবে দেখুন! তাদের বুক থেকে তাদের সন্তান কেড়ে নিলে তাদের কেমন লাগবে.?
আপনারা বলছেন এটা গুজব!
নেত্রকোনার চোখে দেখা ঘটনাটিও কি গুজব বলে উড়িয়ে দিব.?”
এরা সচেতনভাবেই হয়তো জনগণকে অসচেতন করার জন্য এই কাজ করে চলেছেন আবার অনেকেই এদের বাহবা দিচ্ছেন এবং এমন পোষ্ট শেয়ার করছেন। এমতাবস্থায় সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া অতীব জরুরী।