সুনামগঞ্জের তিলক সরকারী প্রাইমারি স্কুল! যে স্কুলের এখন বিল্ডিং আছে তলা নেই। তলার একাংশ ভূমি সহ দক্ষিন এবং পশ্চিমের ভূমি নিয়ে জালিয়াতি।
সরকার বাদী হওয়া আপিল মামলা থাকা সত্বেও স্থাপনা নির্মাণে দখল। এই দখল এবং ভূমি জালিয়াতির সাথে সরাসরি জড়িত বর্তমান স্কুল কমিটির সভাপতি। ইউপি আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতিও উনি। যার নামে গ্রামে এলাকায় অর্থ লুটপাঠের অনেক অভিযোগ আছে। গ্রামের শান্তিপ্রিয় মানুষ উদ্ধারে ব্যার্থ হয়ে দাঙ্গাহাঙ্গামা বিশৃঙ্খলা বিরোধ মামলা মোকদ্দমার ভয়ে মুখ বন্ধ করে আছেন।
যে দুইজন স্কুলের নামে পূর্বে ১৫ শতক ভূমি দান করেছিলেন, একজন আলফল খান (মৃত), আরেকজন হিরন খান। ওয়ারিশান সূত্রে জানা যায় সেই দু’জনের একজন হিরন খান দানকৃত ভূমি স্কুলের নামের পূর্বের দলিল বাতিল করিয়ে বাকি দাতা ওয়ারিশান সদস্যের সই দস্তখত জালসহ জাল দলিলমূলে জেলা নিম্ন আদালতের সাথে প্রতারণা করে পাশের আরেক থানা ‘দিরাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের’ মামলার দলিল আদালতে দাখিল করে আদালতের রায় নিয়ে এসে স্কুলের পিছনের প্রায় ৮/১০লক্ষ টাকার দামি কাঠের গাছ কেটে নিয়ে যান।
ভূমিদাতা আলফত খানের ওয়ারিশান (ভূমিদাতা সদস্য) জনাব শাহলম খান স্কুলে দানকৃত ১৫শতক ভূমির দলিল কাগজপত্র বাহির করতে গিয়ে স্কুলের ভূমি রক্ষায় সরকার বাদী হওয়া মামলার নতিপত্র খুঁজতে গিয়ে দেখতে পান সিনিয়র আদালতে আপিল মামলার রায় শুনানি অবস্থায়।
সরকার পক্ষে আপিল মামলার তদারকির অভাবে’ দেখা মিলে মামলার হেয়ারিং আরেক থানা ‘দিরাই সরকারি প্রাথমিক স্কুলের দানকৃত ভূমি মামলা, সেই স্কুলের দলিল আদালতে আবারও দাখিল করে হেয়ারিং হয়ে আপিল মামলায় রায় নেওয়ার মুখোমুখি এনে দাঁড় করানো।
৯/১০/১৯ ইং তারিখে এই আপিল মামলার রায়ের শুনানির দিন তারিখ ধার্য্ ছিলো। খুঁজ না করলে হয়তো আপিল মামলার রায়টাও ভূমি দলিল জালিয়াতির পক্ষে যেতো। বর্তমান অবস্থায় এই মামলার নতুন করে হেয়ারিং করানোর আবেদন করা হয় জেলা সিনিয়র আদালতে।
পাশাপাশি ভূমিদাতা সদস্য শাহলম খান বাদী হয়ে স্কুলের ভূমি উদ্ধারে সিবিল কোর্টে আরেক’টি নতুন মামলা দায়ের করেন।
সেদিন ( দিরাই স্কুলের দলিল হাতে পেয়ে পড়লাম দেখি সেই দলিলে লেখা ‘যদি সেই স্কুল কখনো উচ্ছেদ হয় কিংবা অন্যখানে চলে যায় অথবা স্কুল দানকৃত ভূমি ব্যবহার না করে তাহলে ভূমি দানকারী সেই স্কুলের ভূমির মালিক রবে ) আমাদের তিলক প্রাইমারি স্কুলের দানকৃত ভূমির দলিলে কিন্তু এমনটি উল্লেখ নেই। এদিকে সরকার পক্ষে স্কুলের ভূমির উপর সরকারের আপিল মামলা চলমান অবস্থায় ঐ ভূমি আবার নতুন মসজিদের নামে দলিলমূলে দান করে দেন দাতা সদস্য হিরন খান।
প্রশ্ন হলো, (১) সাফ দলিলে দানকৃত ভূমি আবার কোন আইনে ফেরত হয়?যদি দলিলে ফেরত উল্লেখ না থাকে?
(২) যে ১৫শতক ভূমি স্কুলের নামে দুইজন দান করেন তাদের মধ্যকার ১৫শতক দানকৃত ভূমির ভাগ-ভাটোরানামা নেই, তবুও কিভাবে উনি এই ১৫ শতক দানকৃত ভূমির ৮শতক জমি চিহ্নিত করে উনার একার দখলে নেন?
(৩) সরকার বাদী হয়ে ভূমি রক্ষায় আপিল মামলা করলে উক্ত দানকৃত ভূমি কিভাবে আবার নতুন মসজিদ নির্মাণে দান করা হয়?
(৪) সরকারী প্রাথমিক মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব কি কি?
স্কুলের ভূমির উপর সরকারের আপিল মামলা চলমান অবস্থায় সভাপতির সহযোগিতায় সেই ভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ সহ ভূমি দখল কিভাবে হয়?
যেখানে স্কুলের ভূমি উদ্ধারের জন্যে শিক্ষা অফিসার, উপজেলার নির্বাহী অফিসার, ভূমি অফিসার, ইউপি ভূমি তফসিলদারকে নির্দেশ দিলে” তফসিলদার সরজমিনে প্রতিবেদন দিতে এলে প্রধান শিক্ষিকার সামনে ভূমি খেকোরা স্কুলের প্রধান কার্যালয়ের ফ্লোরে ফেলে দরখাস্তকারী ভূমি দাতা সদস্যকে বেদর মারপিট করেন।যার চাক্ষুস সাক্ষী হতাহত আমি নিজেও যেখানে তফসিলদার কিংবা প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করার কথা, সেখানে আমি নিজে বাদী হতে হলো কেন?
(৫) স্কুলের নামে দান করা একই ভূমি অন্য দাতা সদস্যের সহ দস্তগত জাল আর অন্য স্কুলের দলিল দিয়ে জালিয়াতি করে এনে আবার সেই ভূমি পুরাতন মসজিদ থাকা অবস্থায় পাশাপাশি নতুন মসজিদ নির্মাণে দান করে দেওয়া ইসলামি শরীয়াহমোতাবেক কতটুকু সঠিক?
ইসলামের কোন দলিলে বলেছে এমন বিতর্কিত ভূমিতে মসজিদনির্মাণের কথা? যারা এসব জেনেশুনে করছেন এরা কি সমাজে আর মুসলমানদের মধ্যকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে দুর্নীতিবাজ ফিতনাবাজ বলে চিহ্নিত হয় না?
অথচ এই সভাপতি এখনো এই স্কুলের সভাপতি পদে বহাল থেকে উক্ত ভূমি জালিয়াতিদের পক্ষে একের পর এক দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করেই চলেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো দায়িত্ব কিংবা নজরদারি নেই।
কে কবে এর প্রতিকার? কবে হবে স্কুলের ভূমি উদ্ধার? আদৌও টনক নড়বে কি সরকারের, তাকিয়ে আমরা গ্রামবাসী।