বাংলাদেশের মানুষের মাঝে কোন ভোটের আগ্রহ বা আমেজ নেই। আমরা ছোট বেলায় নির্বাচনে দেখতাম খুশির আমেজ। পূর্বে ইউপি নির্বাচনে যে খুশির আমেজ ছিল বর্তমানেে জাতীয় নির্বাচনেও থাকেনা। আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও সেই আমেজ নেই। এখনকার নির্বাচন মানে কিছু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। ভোট তো হয় পর্দার আড়ালে। এই ধরেন, প্রচার প্রচারণা, গণসংযোগ, মিছিল মিটিং, পোস্টার লাগানো, প্রতিপক্ষের উপর হামলা, ক্ষমতাসীন প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্গন এবং ইসির নীরবতা।
মিডিয়ার হৈ চৈ, টকশোতে আলোচনার ঝড়, সাধারণ মানুষের অনীহা। ইভিএমে ভোট হবে মানে নীরবে ডাকাতির কারসাজি ইসির। পূর্বে ভোট কারচুপি বা ডাকাতি হলে হৈ চৈ হত কিন্তু এখন আর হৈ চৈ হবেনা যেহেতু ইভিএম আছে।
ইভিএম মানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন। যাকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন ইভিএম মানে হল ইলেকট্রনিক বাটপারি মেশিন কিছু বাটপারদের কারণে মেশিনও বাটপার হয়ে যায়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা নির্বাচন ফেয়ার হবেনা জেনেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে বিএনপি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই ইসির অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল।বিএনপি গনতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচনে অংশগ্রণ করছে।
অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থীরা বলছে নির্বাচনকে তারা দলীয় প্রচার হিসেবে নিয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষ্যে যেভাবে দল ও দলীয় প্রতীক মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠে তা অন্যকোন মাধ্যমে হয়না। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া হাতপাখার প্রার্থী ফজলে বারী মাসউদ সাংবাদিকদের সাক্ষাতকারে বলেছেন- তারা গণমানুষের পক্ষে রাজনীতি করে তাই জনগনের কাছে তাদের যেতে হয়।
সেই কারণে নির্বাচন সুষ্ঠু হবেনা জেনেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তিনি স্মার্ট সিটি গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কে যানজট মুক্ত করবেন। আজ Rtv একটি প্রতিবেদন দেখলাম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রার্থীর পাশাপাশি পিছিয়ে নেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থীদের প্রচারণাও। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে হাতপাখার প্রার্থীরা ভোট চাইছে ।
ঢাকা দুই সিটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দুই প্রার্থীই হেভিওয়েট। ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রতিদন্ধিতা করছেন তরুণ গবেষক প্রিন্সিপ্যাল হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ যিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা উত্তরের সভাপতির পথে রয়েছেন।
দক্ষিণ সিটিতে হাতপাখা নিয়ে প্রতিদন্ধিতা করছেন দলটির কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুর রহমান।
বলা যায় দুই সিটিতেই হাতপাখার হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে। দক্ষিণের প্রার্থী আবদুর রহমান গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।তাঁর ইশতেহার বিশ্লেষণে দেখা গেছে ২১ দফার বেশ কিছু দফা তাৎপর্যপূর্ণ। অবৈধ দখলকৃত জায়গা উদ্ধার,মানুষের বাসোপযোগী সিটি উপহার,হকারদের জন্য আলাদা জায়গা এবং সিটিকে অত্যাধুনিক ও স্মার্ট নগরীতে রূপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
গতকাল প্রেসক্লাবে ইশতেহার ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমদ, যুগ্নমহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, আমিরের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সহ:প্রচার সম্পাদক মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাকী প্রমুখ।
প্রচার প্রচারণায় আওয়ামূ লীগ বিএনপির প্রার্থী থেকে পিছিয়ে নেই হাতপাখার প্রার্থীরা। দলের প্রার্থীরা জিতবে কিনা সে প্রশ্নের চেয়ে বড় প্রশ্ন হলো জনগন ভোট দিতে পারবে কিনা। এই ইসির নিকট অতীত ইতিহাস বিবেচনা করলে সুষ্টু হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবুও দলটির দুই প্রার্থীর জন্য রয়েছে দোয়া ও শুভকামনা অন্তহীন।
লেখকঃনুর আহমদ সিদ্দিকী(মতামত কলামের প্রতিটি লেখা লেখকদের নিজস্ব মতামত। তথ্যে কোন অসাধুতা পরিলক্ষিত হলে প্রকাশক/সম্পাদক কোন দায় গ্রহণ করবে না।)